নিজস্ব প্রতিবেদন : সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘিবলি স্টাইলে ছবি বানিয়ে শেয়ার করার একটা হুজুগ চলছে। সবাই মজা করে নিজের ছবি কার্টুনে রূপান্তরিত করছে, তারপর সেটি পোস্ট করছে বন্ধুদের সঙ্গে। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন, এই ছবি আপলোড করার পেছনে আসলে কী ঘটছে?
এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) কোম্পানিগুলো কি শুধু আপনার ছবি কার্টুনে পরিণত করছে, নাকি আরও কিছু?
Ghibli ai
আপনার অজান্তেই চুরি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ঘিবলি স্টাইল হোক বা অন্য যে কোনো এআই ফিল্টার, এগুলো ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা স্বেচ্ছায় আমাদের মুখের তথ্য এআই কোম্পানিগুলোর হাতে তুলে দিচ্ছি। ফেস রেকগনিশন সিস্টেমের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান কী? হ্যাঁ, আমাদের মুখের ত্রিমাত্রিক ডেটা।আমরা প্রতিদিনই আমাদের চেহারার ছবি দিয়ে যাচ্ছি – ফোন আনলক করার জন্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোড করতে, বন্ধুদের ট্যাগ করতে। কিন্তু এই ছবিগুলো যখন সংরক্ষণ করা হয় এবং বিশ্লেষণ করা হয়, তখন সেটা আমাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য কতটা বিপজ্জনক, সেটা কি আমরা বুঝতে পারি?
পাসওয়ার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের নম্বর বদলানো যায়, কিন্তু মুখের ছবি কি বদলানো সম্ভব? একবার যদি আপনার ফেসিয়াল ডেটা কোনো সন্দেহজনক কোম্পানির হাতে চলে যায়, তখন আপনি কিছুই করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: রেশনে চাল-গম বন্ধ! এবার সরাসরি টাকা পাবেন গ্রাহক, বিপদে রেশন ডিলার রা!
আগেও হয়েছে এমন কাণ্ড!
ক্রিয়ারভিউ এআই নামে একটি সংস্থা একবার বড়সড় কেলেঙ্কারির মুখে পড়ে। অভিযোগ উঠেছিল, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, নিউজ চ্যানেল ও পাবলিক রেকর্ড থেকে ৩ বিলিয়নেরও বেশি ছবি সংগ্রহ করেছে, তাও ব্যবহারকারীদের বিন্দুমাত্র অনুমতি ছাড়া! তারপর সেই বিশাল ডেটাবেস বিক্রি করেছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে।আপনার ছবি থেকে কে উপার্জন করছে?
আপনি হয়তো ভাবছেন, "আমার মতো সাধারণ মানুষের ছবি নিয়ে কে কী করবে?" তাহলে একটু চোখ বুলিয়ে নিন এই পরিসংখ্যানের দিকে –স্ট্যাটিস্টার এক রিপোর্টে জানিয়েছে, ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তির বাজারমূল্য ২০২৫ সালে ৫.৭৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। আর ২০৩১ সালের মধ্যে সেটা হবে ১৪.৫৫ বিলিয়ন ডলার! এই শিল্পের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১৬.৭৯%।গুগল এবং মেটার মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এআই প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারকারীদের ছবি সংগ্রহ করলেও তারা সেগুলো সরাসরি বিক্রি করে না। কিন্তু অন্য অনেক প্রতিষ্ঠান ঠিক এই কাজটাই করছে।
আরও পড়ুন: UPI ব্যবহার করছো Paytm, Google pay, phonepe, নাও চলতে পারে ১লা এপ্রিল থেকে
তাহলে কী করবেন?
কোনো অ্যাপ বা ওয়েবসাইটকে অপ্রয়োজনীয় ক্যামেরা অ্যাক্সেস দেবেন না।সোশ্যাল মিডিয়ায় যেকোনো ছবি আপলোড করার আগে দুইবার ভাবুন।
ফেসিয়াল রেকগনিশন দরকার এমন কোনো প্ল্যাটফর্মে তথ্য দেওয়ার আগে তার নিরাপত্তা নীতি যাচাই করুন।